মার্কিন শুল্ক নিয়ে দুই চিঠির ইতিবাচক সাড়া মিলবে, আশা বাংলাদেশের

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এবং মার্কিন বাণিজ্য দফতরে যে দুটি চিঠি পাঠানো হয়েছে সেই চিঠির ইতিবাচক সাড়া মিলবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। সেই আশার কথা জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে। আমরা আশাবাদী এই সমস্যার সমাধান হবে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থ উপদেষ্টা এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
ট্রাম্পকে দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছি। আমরা আশা করি তারা আমাদের সাথে সহযোগিতা করবে, যেভাবে আমরা তাদের সাথে সহযোগিতা করছি। সুতরাং, এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। আমরা আমাদের সমস্যা তুলে ধরেছি এবং আমি আশা করি এর সমাধান হবে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এটি ইতিবাচক কারণ, এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।
এদিকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর সরকার এখনো কোনো সাড়া পায়নি।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো বাণিজ্য ঘাটতি কমানো বা দূর করা এবং আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। কোন পণ্যের ওপর জোর দিয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কীভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণ পরিচালনা করছি।
শেখ বশির বলেন, আসলে এটি একটি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল বিষয় এবং যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়াও কিছুটা কঠিন। এটি বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে আমরা আমাদের কৌশলগুলো ঠিক করব।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বশির বলেন, প্রায় ১০০টি পণ্যের ওপর শূন্য আমদানি শুল্ক আরোপের সরকারের পদক্ষেপের ফলে তারা অবশ্যই ইতিবাচক কিছু আশা করছেন। তিনি বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় কঠোর পরিশ্রম করছি এবং বাণিজ্য ঘাটতি কীভাবে কমানো যায় তা সমাধানের চেষ্টা করছি।
ইতোমধ্যে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিদ্যমান ১৯০টি পণ্যের পাশাপাশি আরও ১০০টি মার্কিন পণ্যের ওপর শূন্য আমদানি শুল্ক দিতে প্রস্তুত।
এর আগে গতকাল সোমবার অধ্যাপক ইউনূস ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের আবেদন তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন, যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে মার্কিন রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির উদ্যোগটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, আমরাই প্রথম দেশ যারা এই ধরনের সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিনি চিঠিতে ফেব্রুয়ারিতে উচ্চতর প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানের ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথাও উল্লেখ করেছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টাও গতকাল সোমবার মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে চিঠিটি পাঠিয়েছেন। উপদেষ্টা চিঠিতে লিখেছেন, বাংলাদেশ মার্কিন তুলার বৃহত্তম আমদানিকারকদের মধ্যে একটি, তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির ওপর উচ্চ শুল্কের সম্মুখীন হয়।