ইসরায়েলের বুকে কাঁপন ধরিয়েছিলেন যে বাংলাদেশি বীর

গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেই স্মরণ করেছেন ১৯৬৭ সালের তৃতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের ইতিহাস। যে যুদ্ধে ইসরায়েলের যমদূত হয়ে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর পাইলট সাইফুল আজম সুজা। সাইফুল আজম পৃথিবীর ইতিহাসের একমাত্র যোদ্ধা, যিনি একক ব্যক্তি হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার অনন্য রেকর্ড গড়েছেন।
৬ জুন, ১৯৬৭। জর্ডানের মাফরাক বিমানঘাঁটিতে আক্রমণ করে ইসরায়েলের চারটি সুপারসনিক ‘ডাসল্ট সুপার মিস্টেরে’ যুদ্ধবিমান। প্রতিপক্ষের তুলনায় প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও ‘হকার হান্টার’ বিমান নিয়ে ইসরায়েলিদের মোকাবিলা করেন সাইফুল আজম। একাই ভূপাতিত করেন দুটি ইসরায়েলি বিমান। এর মধ্যে একটি বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন গিডিওন দ্রোর যুদ্ধবন্দি হন। আজমের এই সাফল্যে ইসরায়েলের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। যুদ্ধের প্রথম ৭২ ঘণ্টায় মোট চারটি ইসরায়েলি বিমান ধ্বংসের রেকর্ড গড়ে তিনি ‘নাত আল-সুজাহ’ সম্মাননা লাভ করেন।
পাকিস্তান, জর্ডান, ইরাক ও বাংলাদেশ—চার দেশের বিমানবাহিনীতে দায়িত্ব পালনকারী একমাত্র বৈমানিক সাইফুল আজম। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে মাতৃভূমির সেবায় নিয়োজিত হন তিনি। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী তাকে ‘লিভিং ইগলস’ খেতাবে ভূষিত করে। ২০২০ সালে ৮০ বছর বয়সে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এই কিংবদন্তির।
বর্তমান গাজার সংকটে ফিলিস্তিনিদের পাশে আজমের মতো বীরের অভাব অনুভব করছেন অনেকেই। দীর্ঘ ১৫ মাসের এই ইসরায়েলের হামলায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। হামাসের প্রতিরোধ সত্ত্বেও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।